খালেদা জিয়ার কারাদণ্ডের প্রতিবাদে ও নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে বিএনপির পূর্বঘোষিত ‘শান্তিপূর্ণ’ মানববন্ধ শেষ পর্যন্ত রূপ নেয় ‘বিশাল’ সমাবেশে। সোমবার সকাল ১০ টা থেকে বেলা ১২ টা পর্যন্ত জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এ কর্মসূচি পালন করে বিএনপি।
টানা দুই ঘণ্টার এ ‘শান্তিপূর্ণ’ কর্মসূচি শেষ হয় দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন ও নজরুল ইসলাম খানের সংক্ষিপ্ত বক্তব্যের মধ্য দিয়ে। তাদের সঙ্গে ছিলে স্থায়ী কমিটির আরো দুই সদস্য মির্জা আব্বাস ও আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী।
সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘আমাদের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি অব্যহত থাকবে। শান্তিপূর্ণ কর্মসূচির মাধ্যমেই খালেদা জিয়াকে মুক্ত করে আনব। খালেদা জিয়া ছাড়া কোনো নির্বাচন এ দেশে হতে দেওয়া হবে না।’
কারাবন্দি খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে পূর্ব ঘোষিত মানববন্ধন কর্মসূচি শুরু হওয়ার কথা ছিল সকাল ১১ টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে। কিন্তু সকাল ১০টার পর থেকেই ঢাকার বিভিন্ন এলাকা থেকে বিএনপির নেতা-কর্মী ও সমর্থকরা প্রেস ক্লাবের সামনে এসে জড়ো হতে থাকেন।
সকাল সাড়ে ১০ টার মধ্যে সচিবালয়ের পশ্চিম কোণের সড়ক মোড় থেকে হাইকোর্টের সামনের কদম ফোয়ারা পর্যন্ত নেতা-কর্মীতে সয়লাব হয়ে যায়। এ সময় বিঘ্নিত হয় যান চলাচল। দুর্ভোগে পড়েন হাজার হাজার সাধারণ যাত্রী।
সকাল পৌনে ১১ টায় মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর প্রেস ক্লাবের সামনে এসে রাস্তা বন্ধ করে দাঁড়িয়ে থাকা নেতা-কর্মী, সমর্থকদের সরিয়ে দেন। ব্যানার নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকা কর্মীদের দুই হাতে ঠেলে ফুটপথের দিকে নিয়ে যান তিনি। তাকে সহযোগিতা করেন ঢাকা মহানগর বিএনপির বিভিন্ন ইউনিটের শীর্ষ নেতারা। পুলিশ কর্মকর্তারাও এ কাজে সহযোগিতা করেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে।
সময় বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে মানববন্ধনে বিএনপির নেতা-কর্মী ও সমর্থকদের জমায়েত বাড়তে থাকে। এক সময় তা রূপ নেয় ‘বিশাল’ সমাবেশে। হাজার হাজার নেতা-কর্মীর স্লোগানে স্লোগানে প্রকম্পিত হয়ে ওঠে প্রেস ক্লাবের সামনের সড়ক। খালেদা জিয়ার ছবি সম্বলিত ব্যানার, পোস্টার ও ফেস্টুন নিয়ে ‘আমার নেত্রী আমার মা’ জেলে থাকতে দেব না’, ‘জেলের তালা ভাঙ্গব, খালেদা জিয়াকে আনব’ বলে স্লোগান দেন বিএনপির কর্মীরা।
বিএনপি ঘোষিত এ কর্মসূচিতে ২০ দলীয় জোটের শীর্ষ নেতারাও অংশ নেন। তারাও বিএনপি নেতাদের সঙ্গে অবস্থান করেন রাজপথে। খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে স্লোগান দেন।
প্রেস ক্লাবের সামনের পুরো রাস্তা জুড়ে অবস্থান নেন নেতা-কর্মীরা। আর প্রধান ফটকের পশ্চিম পাশের ফুটপাতে অবস্থান নেন বিএনপিসহ ২০ দলীয় জোটের শীর্ষ নেতারা।
এ সময় ফখরুলসহ শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে ছবি ও সেলফি তোলার জন্য হুমড়ি খেয়ে পড়েন বিএনপির নেতা-কর্মী ও সমর্থকরা। প্রচণ্ড চাপে ও গরমে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। পেছনে গিয়ে কিছু সময় চেয়ারে বসে বিশ্রাম নিয়ে আবার কর্মসূচিতে যোগ দেন বিএনপির মহাসচিব।
এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মির্জা আব্বাস, নজরুল ইসলাম খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল আউয়াল মিন্টু, মো. শাহজাহান, বরকত উল্লাহ বুলু, শামসুজ্জামান দুদু, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবদুস সালাম, হাবিবুর রহমান হাবিব, মিজানুর রহমান মিনু, যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, খায়রুল কবির খোকন, সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন প্রমুখ।
No comments:
Post a Comment